আর মাত্র এক দিন পরই পবিত্র ঈদুল আজহা। শেষ সময়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদ উদ্‌যাপন করতে ঢাকা ছেড়ে যাচ্ছেন দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার অনেকে। এতে আজ সোমবার সকালে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া লঞ্চঘাটে ঘরমুখী মানুষের প্রচণ্ড ভিড়।

আজ সকাল ১০টার দিকে শিমুলিয়া লঞ্চঘাটের সড়কে প্রবেশ করতেই যাত্রীদের চাপ লক্ষ করা যায়। ২ ও ৩ নম্বর লঞ্চঘাট দিয়ে লঞ্চের দিকে যাচ্ছিলেন যাত্রীরা। গ্যাংওয়ে ও ঘাটের পন্টুনে ছিল যাত্রীদের ভিড়। ঘাটে লঞ্চ আসা মাত্রই যাত্রীরা লঞ্চে উঠতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন।

শিমুলিয়া লঞ্চঘাট সূত্রে জানা যায়, কয়েক দিন ধরে এ ঘাট দিয়ে মানুষ বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন। স্পিডবোট চলাচল বন্ধ রয়েছে। অধিকাংশ যাত্রী লঞ্চে করেই পদ্মা পাড়ি দিচ্ছেন। ফলে ঘাটে যাত্রীর চাপ লেগে আছে। গত কয়েক দিনের তুলনায় আজকে চাপ কয়েক গুণ বেড়েছে। শত চেষ্টা করেও যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি মানানো যাচ্ছে না।

ইমরুল কাজী নামে এক যাত্রী বলেন, তিনি নরসিংদীর একটি টেক্সটাইল মিলে কাজ করেন। ঈদের ছুটি হয়েছে। তাই গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে যাচ্ছেন। সড়কের অবস্থা ভালো থাকলেও ঘাটে এসে ভিড়ের মধ্যে পড়েছেন। যাত্রীদের চাপে স্বাস্থ্যবিধি উধাও হয়ে গেছে।

রেহানা বেগম নামে লঞ্চের এক যাত্রী বলেন, লঞ্চঘাটে খুব গাদাগাদি। ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও স্বাস্থ্যবিধি মানা সম্ভব হচ্ছে না। গরমে কষ্ট করতে হচ্ছে। তারপরও ঈদে বাড়ি যাচ্ছেন ভেবেই তাঁর খুব ভালো লাগছে।

মাহবুবুর রহমান নামের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, ঈদ করতে নড়াইলে গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, স্বাস্থ্যবিধি মেনে যানবাহন চলাচল করার কথা। তবে বাসগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মানা হয়নি। স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না ঘাটেও। যাত্রীদের গাদাগাদি তো আছেই। লঞ্চে যে পরিমাণ যাত্রী নেওয়ার কথা, তার চেয়ে বেশি যাত্রী নেওয়া হচ্ছে। এতে করোনার সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে।

মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার শিমুলিয়া লঞ্চঘাটে ঘরমুখী মানুষের ভিড়। গ্যাংওয়ে ছিল যাত্রীতে পূর্ণ। সোমবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে

মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার শিমুলিয়া লঞ্চঘাটে ঘরমুখী মানুষের ভিড়। গ্যাংওয়ে ছিল যাত্রীতে পূর্ণ। সোমবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে

শিমুলিয়া লঞ্চঘাটের সুপারভাইজার মো. শাহ আলম বলেন, ৮৪টি লঞ্চ দিয়ে যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাত্রীদের লঞ্চে উঠতে বলা হচ্ছে বলে দাবি তাঁর।

নৌপরিবহন অধিদপ্তরের লঞ্চঘাট পরিদর্শক জহিরুল কাইয়ুম সকালে প্রথম আলোকে বলেন, ঘাটে যাত্রীদের প্রচণ্ড চাপ রয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখতে মাইকিং করা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও কাজ করছেন। তবে যাত্রীদের মধ্যে আইন মানার ব্যাপারে অনীহা দেখা গেছে। স্বাস্থ্যবিধি মানানোর জন্য শতভাগ চেষ্টা করা হচ্ছে।

লৌহজং উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) হুমায়ুন আহম্মেদ বলেন, ইতিমধ্যে গার্মেন্টস, শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ঈদের ছুটি হয়েছে। তাই ভোর থেকেই ঘাটে প্রচণ্ড যাত্রীর চাপ লেগে আছে। যাত্রীদের মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিতে চেষ্টা করা হচ্ছে।

Md Rabbi Hawlader

By

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *